চীনের কাছ থেকে অত্যাধুনিক ২০টি যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। আর এতে খরচ হবে ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। মূলত নির্বাচনের ম্যান্ডেট নিয়ে আসা ক্ষণস্থায়ী এই সরকার হঠাৎ কেন এত বড় একটি ক্রয় চুক্তি করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন মহলে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ফেসবুক প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসেও সম্প্রতি এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চীনের তৈরি ২০টি জে -১০ সিই মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
চলতি ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে এই চুক্তিটি বাস্তবায়নের আশা করা হচ্ছে বলেও এই স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরাসরি ক্রয় অথবা জিটুজি পদ্ধতিতে চীন সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এগুলো কেনা হবে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, প্রতিরক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ খাতের কেনাকাটার ক্ষেত্রে কেন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার? তাছাড়া, যখন নির্বাচনের আর মাত্র পাঁচ মাস বাকি, এমন সময়ে প্রতিরক্ষা খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের এমন গুরুত্বপূর্ণ ক্রয় সিদ্ধান্ত ভাবাচ্ছে সামরিক খাতের বিশেষজ্ঞদেরও।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া স্ট্যাটাসে অবশ্য যুদ্ধবিমান কেনার কারণ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি লাইন উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং জাতীয় আকাশ প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতেই ২০টি যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে সরাসরি কেনা হবে, নাকি জিটুজি পদ্ধতিতে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি হবে, সেটি পরিষ্কার করা হয়নি তার স্ট্যাটাসে।
উল্লেখ্য, গত বছর অগাস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে গত মার্চে চীন সফর করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই সরকারের মেয়াদকালে দফায় দফায় চীন সফর করেছেন।
এরই মধ্যে আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী ভোটের আগে এই সরকারের হাতে আছে মাত্র চার মাসের মতো।
ফলে, নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে প্রতিরক্ষা খাতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্রয়চুক্তি করা এই সরকারের জন্য কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে সন্দিহান সামরিক খাতের বিশেষজ্ঞরা।
তবে, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও যুদ্ধের প্রস্তুতি সংক্রান্ত নিরাপত্তা সক্ষমতা (ডেফারেন্স) বজায় রাখতে বাংলাদেশের যুদ্ধবিমান কেনা প্রয়োজন বলেও স্বীকার করেন তারা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আ.ন.ম মুনীরুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন, যে কোনো দেশকে হুমকি মোকাবিলায় প্রতিরক্ষার জন্য যুদ্ধবিমানসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে হয়।
তবে তিনি মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার নয়, বরং নির্বাচিত সরকারেরই এই ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া উচিত।
বিবিসি বাংলাকে তিনি আরও বলেন, কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যারা সাময়িকভাবে দেশের শাসনভার নিয়েছেন এবং তারা তাদের তাদের মেয়াদের শেষ প্রান্তে চলে আসছেন, বলতে গেলে ইলেকশনের থেকে খুব কাছাকাছি সময় এরকম বড় ধরনের কোনো কেনাকাটার দিকে সেই সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত না বলে আমি মনে করি।
আ.ন.ম মুনীরুজ্জামান বলেন, এই যুদ্ধবিমানগুলো কিনতে প্রায় দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে। কাজেই এতো বড় একটা ক্রয় যেটা তারা করার সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা পরবর্তী যে নির্বাচিত সরকার আসবে তাদের ঘাড়ে গিয়ে পড়বে। কাজেই এই ধরনের সিদ্ধান্তটা সাধারণত এই শেষ মুহূর্তে এসে কোনো সরকারের নেওয়া উচিত হবে না।
তিনি মনে করেন, যেহেতু একটা নির্বাচিত সরকারের দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ, সেক্ষেত্রে তাদের ওপরই এই সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া উচিত।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের আমলেও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে বেশ তোড়জোড় ও আলোচনা হতে দেখা গিয়েছিল। ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের যুদ্ধবিমান ক্রয় সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয় বলে জানান সামরিক খাতের বিশেষজ্ঞরা।
সেসময় বাংলাদেশ ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইউরো ফাইটার টাইফুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬; এই তিনটি থেকে কোন যুদ্ধবিমান কেনা হবে; সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরে, ২০২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর দুইদিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। সেসময় ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
তবে, করোনা মহামারীর সময় আর্থিক সংকটে এসব আলোচনা থমকে গিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আবার যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনা সামনে এলো।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে নিয়োগ দেশের অন্যতম মানবিক সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে একজন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পদের নাম: টেকনিক্যাল অফিসার পদসংখ্যা: ১ জন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ২ বছর বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৪০ বছর বেতন ও চাকরির ধরন বেতন: ৫০,০০০ টাকা চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল: কুড়িগ্রাম আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির তত্ত্বাবধানে নতুন সমন্বিত ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নিয়োগের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-এ সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদে ৩৯৮ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পদের নাম: সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদসংখ্যা: ৩৯৮টি শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রার্থীদের যেকোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানসহ তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্তত দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। বয়সসীমা ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে। আবেদন সংক্রান্ত তথ্য আবেদন ফি: ২০০ টাকা (অনগ্রসর নাগরিক গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ৫০ টাকা)। আবেদনের শেষ সময়: ১০ নভেম্বর ২০২৫। আবেদন পদ্ধতি আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টেকনিক্যাল এক্সপার্ট’ পদে নতুন কর্মী নেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: ওয়াটারএইড বাংলাদেশ পদের নাম: টেকনিক্যাল এক্সপার্ট পদের সংখ্যা: নির্ধারিত নয় চাকরির ধরন: ফুল টাইম প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই কর্মস্থল: খুলনা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা স্নাতক (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং/এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে) অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছর বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন ও সুবিধা বেতন: প্রতি মাসে ৯২,৫০০ টাকা আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫
মায়ের অসুস্থতার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে আসায় পরীক্ষা না দিতে পারা সেই আনিসা আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তিনি বাংলা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ফেল করেন। আনিসা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি মানবিক বিভাগের পরীক্ষাথী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই (২৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এসময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে তিনি সেদিন ফিরে যান। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ। আনিসার কান্না-আকুতি তখন নাড়িয়ে দেন বহু মানুষের বিবেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে—আইন কি মানবিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে? নেটিজেনরা দাবি তোলেন—মানবিক বিবেচনায় হলেও তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারও সেই দাবি আমলে নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তখন শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানানো হয়, ‘পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
চলতি বছরে একাধিক দীর্ঘ ছুটি উপভোগ করেছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। সবশেষ শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চারদিনের ছুটি কাটানোর পর এবার সামনে আসছে আরও একটি লম্বা সরকারি ছুটি। বুধবার (২২ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ছুটির ক্যালেন্ডার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তিকে চাকরিজীবীরা আরও দুটি সাধারণ ছুটি পাবেন। এর মধ্যে একটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা তিন দিনের ছুটি ভোগ করতে পারবেন তারা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের বাকি সময়ের দুটি সাধারণ ছুটি হলো— ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিজয় দিবস ২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন বা বড়দিন এর মধ্যে বড়দিনের ছুটি বৃহস্পতিবার পড়ায় এর পরের দুই দিন শুক্রবার ও শনিবারের সাপ্তাহিক বন্ধ মিলে টানা তিন দিনের ছুটি উপভোগ করবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। এর আগে, চলতি বছরের শারদীয় দুর্গাপূজায় ১ অক্টোবর নির্বাহী আদেশে ছুটি, ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর ছুটি এবং ৩ ও ৪ অক্টোবর শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক বন্ধ মিলিয়ে টানা চারদিনের ছুটি কাটান তারা। চলতি বছর সবচেয়ে বড় ছুটি আসে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায়। ঈদুল ফিতরে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা ৯ দিন, আর ঈদুল আজহায় টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন। বছরের শেষ দিকে বড়দিনের টানা ছুটি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বছরের সমাপ্তিকে আরও আনন্দময় করে তুলবে বলে অনেকে মনে করছেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের প্রতিটি ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনী গভীরভাবে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে—অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা বিস্তারিতভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। এতে আরও বলা হয়, যদি কোনো ঘটনার পেছনে নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের প্রমাণ মেলে, সরকার তাৎক্ষণিকভাবে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—যদি এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হয় এবং এর উদ্দেশ্য হয় আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টি করা, তবে তারা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের বিবেচনা ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব।” অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, বাংলাদেশ অতীতেও বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করা হবে। “আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই,”—বিবৃতিতে যোগ করা হয়। এরই মধ্যে শনিবার দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট কাজ করে, সঙ্গে যোগ দেয় নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। সন্ধ্যার দিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার একটি তোয়ালে কারখানায় এবং ১৪ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ির একটি রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক ধাক্কায় রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন শুরু হলে ২০২২ সালে আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) দারস্থ হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সে সময় নানা শর্তে ঋণ চুক্তি হয় ৪৭০ কোটি ডলারের। চুক্তি অনুযায়ী, তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি টাকা পায় বাংলাদেশ। কিন্তু, ২০২৪ সালে জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন্ধ হয়ে যায় আইএমএফের ঋণের বাকি কিস্তি ছাড়। নানা শর্তের বেড়াজালে আটকে যায় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে, কয়েক দফায় আলোচনার পর আইএমএফ অবশেষে আগামী বছরের জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে আরও ৮০ কোটি ডলারের আরেকটি ঋণ চুক্তি হয়েছে আইএমএফের সঙ্গে। কিন্তু, এর জেরে সংস্কার প্রশ্নে আরও বাড়তি কঠিন শর্ত জুড়ে দিতে চাইছে সংস্থাটি। এ অবস্থায় প্রতিশ্রুত ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ যদি আরও নতুন বা কঠোর কোনো শর্ত আরোপ করে, তাহলে আইএমএফকে বাদ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঋণের বিকল্প উৎস চিন্তা করবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বার্ষিক সভায় দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) নতুন কোনো শর্ত আরোপ বা কঠোর হিসাব নির্ধারণ করা হলে সরকার তা পুনর্বিবেচনা করবে। আমরা বিকল্প উৎস নিয়ে চিন্তা করব, কারণ আমাদের অর্থনীতি আগের থেকে অনেক স্থিতিশীল। তিনি জানান, বাজেট সহায়তা নেওয়া হবে কি না—তা এখনো চূড়ান্ত নয়। তবে আইএমএফের শর্তসমূহ যদি দেশের জন্য অনুকূল না হয়, তাহলে সরকার বিকল্প উৎস থেকে সহায়তা নেওয়ার দিকেই নজর দেবে। অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা এখন চেষ্টা করছি বিকল্প বাজেট সহায়তার ব্যবস্থা করতে—এডিবি, এআইআইবি’র মতো সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ আছে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা আইএমএফের চলমান প্রোগ্রামে আছি, তবে নতুন প্রোগ্রামে যাব কি না, সেটি সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। তবে, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বার্ষিক সভার পাশাপাশি একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, আমরা এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, ওপেকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে উন্নয়ন ঋণ, অনুদান ও বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যৎ সহযোগিতা ও সংস্কার কর্মসূচি নিয়েও মতবিনিময় চলছে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে এবং আরও কয়েকটি বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়া তিনি কমনওয়েলথ ফাইন্যান্স ব্রিজ ফোরাম-এ অংশ নিয়ে বাংলাদেশের আর্থিক অগ্রগতি ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেছেন। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছর যেখানে আমরা ছিলাম, তার চেয়ে এখন বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা এসেছে, বৈদেশিক মুদ্রাবাজার ও রিজার্ভের অবস্থান উন্নত হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমেছে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমে গতি ফিরেছে। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, যা উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। ‘সংস্কার কার্যক্রম এখনো চলমান এবং রেগুলেটরি কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে কিছু সময় লাগবে। তিনি উল্লেখ করেন, সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং পরবর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দিকনির্দেশনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নতুন প্রজন্ম যেন এসব সংস্কারের সুফল পায়, সেদিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের অর্থনীতির ইতিবাচক রূপান্তর এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃশ্যমান। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দুটি নতুন প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে, যা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। চলমান স্থিতিশীলতা ও সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী বছরগুলোতে আরো ভালো হবে।