রাজধানীর পল্টন এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালানো ঘটনায় তদন্তে বেরিয়েছে বিস্ময়কর ও প্রি-প্ল্যানড তথ্য। ঘটনার আগের রাতে হামলাকারী ফয়সাল তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে জানিয়েছিলেন, পরদিন এমন কিছু ঘটবে যা “সারাদেশ কাঁপাবে”।
গত শুক্রবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় হামলা ঘটে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাদিকে সিঙ্গাপুরে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, হামলার পরিকল্পনা বহু আগে থেকেই করা হয়েছিল এবং এর জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, মোটরসাইকেলের মালিক মো. কবির, ফয়সালের বাবা-মা এবং আরও অনেকে। উদ্ধার করা হয়েছে অগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ম্যাগাজিন এবং কয়েক কোটি টাকার চেক।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফয়সাল ও মারিয়া সাভারের একটি রিসোর্টে রাত কাটিয়েছিলেন। ফয়সাল ওই রাতে বান্ধবীকে জানিয়েছিলেন, পরদিন এমন কিছু ঘটবে যা পুরো দেশ কাঁপাবে। পরদিন সকালে তারা রিসোর্ট থেকে ঢাকায় এসে হামলা ঘটান। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ভুয়া ছিল, যা পরে আসল নম্বর দিয়ে পরিবর্তন করা হয়।
তদন্তে মোহাম্মদপুরের এক সাবেক কাউন্সিলরকে হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্তত ২০ সদস্যের একটি সুসংগঠিত চক্র হত্যাচেষ্টায় জড়িত ছিল। এছাড়া মানবপাচার ও অস্ত্র সরবরাহে বিভিন্ন সহযোগীও যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফয়সালের বাসা থেকে কয়েক কোটি টাকার চেক উদ্ধার হয়েছে। তার বাবা-মা ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও গ্রেপ্তার হয়েছেন। মোটরসাইকেলের মালিক কবির সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হামলার পূর্বপরিকল্পনা ও সহযোগীদের তথ্য দিয়েছেন। হামলার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে কর্নেল গলির বোনের বাসা এবং তরুয়ার বিল থেকে।
ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় তদন্ত ত্বরান্বিত হচ্ছে, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ চলছে। ময়মনসিংহে প্রাইভেট কার চালকসহ আরও সহযোগীদের খোঁজ চলছে, যাদের ধরতে পারলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে।
তদন্তে উঠে এসেছে, হামলার পিছনে অর্থায়ন ও সুসংগঠিত সহযোগী সংযোগ রয়েছে। মামলার তদন্ত এখন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং পরবর্তী দিনগুলোতে আরও গ্রেপ্তারির আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫
দেশের মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ‘স্পন্দনবি’। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইমদাদ সিতারা খান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবারও বৃত্তি প্রদান করবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিষয়ে পড়ুয়া প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী এই বৃত্তির সুযোগ পাবেন। আগ্রহীরা আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ডাক, কুরিয়ার বা সরাসরি উপস্থিত হয়ে আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কারা আবেদন করতে পারবেন? বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণ এবং বর্তমানে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত নিম্নোক্ত বিষয়ের মেধাবী, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন— বিএসসি অনার্স বিএসসি অনার্স (কৃষি, পশুপালনসহ সব অনুষদ) এমবিবিএস বিডিএস বিএসসি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং বিএ অনার্স বিএসএস অনার্স বিবিএ আবেদনপত্র সংগ্রহ আবেদনকারীরা নিচের যেকোনো মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন— 🔗 https://spaandanb.org/projects/imdad-sitara-khan-scholarship/ 🔗 https://www.facebook.com/share/g/1FXJc2NhHe অথবা ই-মেইলে যোগাযোগ করেও ফর্ম সংগ্রহ করা যাবে— mostafiz14@yahoo.com rajib.bd@spaandanb.org tuhin.bd@spaandanb.org sajedul1233@gmail.com zabbarbd5493@gmail.com আবেদন পাঠানোর ঠিকানা স্পন্দনবি বাংলাদেশ অফিস বাসা-৭/২, শ্যামলছায়া-১, ফ্ল্যাট-বি/২, গার্ডেন স্ট্রিট, রিং রোড, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। যোগাযোগ বৃত্তি সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য অফিস সময়ে যোগাযোগ— ☎️ ০২-৪৮১১৪৪৯৯ 📱 ০১৭১৩-০৩৬৩৬০ 📱 ০১৭৭৩-৬১০০০৯ 📱 ০১৯৩৩-৫৬০৬৬৫ 📱 ০১৭৯৬-১০২৭০০
পোশাক প্রস্তুতকারক ও বিপণন প্রতিষ্ঠান আড়ং নতুন কিছু পদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদের বিবরণ: পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট বিভাগ: হেলথ সিকিউরিটি স্কিম (HSS), সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড প্রোডিউসার ডেভেলপমেন্ট (SCPD) পদসংখ্যা: নির্ধারিত নয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: শিক্ষাগত যোগ্যতা: যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অন্য যোগ্যতা: এমএস এক্সেল এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে দক্ষতা ডকুমেন্টেশন ও ফাইল ব্যবস্থাপনায় পারদর্শিতা অভিজ্ঞতা: কমপক্ষে ১–২ বছর চাকরির ধরণ ও অন্যান্য তথ্য: চাকরির ধরন: ফুলটাইম কর্মক্ষেত্র: অফিসে প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন বয়সসীমা: উল্লেখ নেই কর্মস্থল: ময়মনসিংহ (ত্রিশাল) বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে অন্যান্য সুবিধা: প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, উৎসব বোনাস, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা এবং প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা আবেদন করার নিয়ম: আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে আবেদন করতে পারেন।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে নিয়োগ দেশের অন্যতম মানবিক সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে একজন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পদের নাম: টেকনিক্যাল অফিসার পদসংখ্যা: ১ জন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ২ বছর বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৪০ বছর বেতন ও চাকরির ধরন বেতন: ৫০,০০০ টাকা চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল: কুড়িগ্রাম আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান যমুনা গ্রুপ নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্লাজা সেলস বিভাগে ‘এক্সিকিউটিভ’ পদে ১০০ জন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ৮ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: যমুনা গ্রুপ বিভাগ: প্লাজা সেলস পদের নাম: এক্সিকিউটিভ পদসংখ্যা: ১০০টি যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা প্রার্থীকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে। এ পদে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন নেই, তাই নবীন প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। অন্যান্য তথ্য চাকরির ধরন: ফুল-টাইম বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে প্রার্থীর ধরন: নারী ও পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন বয়সসীমা: ন্যূনতম ২২ বছর কর্মস্থল: দেশের যেকোনো স্থানে আবেদন সংক্রান্ত তথ্য আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ সময়: ৮ নভেম্বর ২০২৫।
চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটমুক্ত একটি ঢাকা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন নিহত ইনকিলাব মঞ্চের সাবেক মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। বাংলাদেশের তরুণদের মেধা ও শ্রমকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে সমাজ থেকে অন্যায় উৎখাত করার প্রত্যয় ছিল তার কণ্ঠে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে কী করতে চান, কোন স্বপ্ন তাকে তাড়িত করে—সে কথাগুলো তিনি অকপটে তুলে ধরেছিলেন। ঢাকা–৮ আসন থেকে নির্বাচিত হলে প্রথম লক্ষ্য হবে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া—এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি। তিনি বলেছিলেন, ‘একটা কথা বলে রাখি—ঢাকা আটের কোনো প্রান্তে চাঁদাবাজি হবে না। এটা আমি নিশ্চিত করে বলছি।’ তবে বাস্তবতার কথাও অস্বীকার করেননি তিনি। বলেন, ‘সিন্ডিকেটটা অনেক বড়। সব আমি বন্ধ করতে পারব কিনা জানি না। তবে কিছু কাজ অবশ্যই করব।’ চাঁদাবাজি প্রতিরোধে নিজের প্রথম পদক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে আপসহীন এই তরুণ বলেন, ‘ঢাকা আটের কোনো সবজিওয়ালা বা ভ্যানওয়ালার কাছ থেকে যদি কেউ চাঁদা তোলে, আর আমি ওসমান হাদি সেটা শুনি—আমি আমার টিম নিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়াব। আমার গায়ে হাত দিয়ে তারপর চাঁদা তুলতে হবে।’ আর যদি চাঁদাবাজির পেছনে থাকে বড় কোনো “রাঘববোয়াল”, যে নিজে সামনে আসে না—লোক পাঠায়—তাদের ক্ষেত্রেও কঠোর অবস্থানের কথা জানান তিনি। বলেন, ‘যারা লোক পাঠিয়ে চাঁদাবাজি করাবে, তাদের নামটা তো জানবই।’ দ্বিতীয় ধাপে চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের নাম প্রকাশ্যে আনার ঘোষণা দিয়ে হাদি বলেন, ‘ঢাকা আটের মধ্যে যারা ছানাপোনা পাঠিয়ে চাঁদাবাজি করাবে, আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহ বলে এক এক করে সবার নাম প্রকাশ করে দেব। এরপর যা আছে কপালে—আমার হবে। তবু এটা আমি করবই।’ চাঁদাবাজির পাশাপাশি ঢাকা–৮ কেন্দ্রিক হাসপাতালগুলোতে গড়ে ওঠা চিকিৎসা সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। হাদির ভাষায়, ‘পুরো বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার হাব হলো শাহবাগ। পিজি, বারডেম, ঢাকা মেডিকেলে এমনভাবে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে—চিকিৎসা তো দূরের কথা, আপনি মারা গেলেও আপনার লাশ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স সিন্ডিকেট করা হবে।’ তিনি অভিযোগ করেন, মরদেহ বহনের জন্য ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করা হয়। কেউ কম দিতে চাইলে মরদেহ অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় না। এই পরিস্থিতি বদলাতে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে হাদি বলেন, ‘আমি ইনকিলাব মঞ্চের ভাই এবং ঢাকা আটের তরুণ বন্ধুদের নিয়ে একটি ভলান্টিয়ারি টিম গড়ব। যারা হাসপাতালে আসা মানুষদের বিনা মূল্যে সহায়তা করবে।’ তার পরিকল্পনায় ছিল হাসপাতাল এলাকায় ভলান্টিয়ার বুথ স্থাপন, রোগীদের সঠিক বিভাগে পৌঁছে দেওয়া এবং চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে পাশে থাকা। তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক অসুস্থ মানুষ জানেই না কোন ডিপার্টমেন্টে যাবে। তাদের সাপোর্ট করার মতো কেউ নেই। আমরা সেই জায়গাটা পূরণ করব।’ নিজেকে স্বপ্নবাজ তরুণ হিসেবে তুলে ধরে হাদি বলেছিলেন, ‘আমি অনেক বড় বড় স্বপ্নের কথা বলতে পারি। কিন্তু আমি ওসমান হাদি যেটা বলি, ইনশাআল্লাহ সেটা করার জন্যই বলি।’ রাজনীতিতে তরুণদের সক্রিয় ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাকে এমপি বানান, তাহলে বাকি ২৯৯ জন এমপি তাদের ভোটারদের কাছে পরের নির্বাচনে চাপের মুখে পড়বেন। তারা বাধ্য হবেন জবাব দিতে—এই ছেলেটা পারলে আপনারা কেন পারলেন না?’ এমন অসংখ্য স্বপ্ন ও প্রত্যয় বুকে নিয়ে আজ (শনিবার) মাটির ঘরে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন শরিফ ওসমান হাদি। তার স্বপ্নগুলো রয়ে গেল মানুষের স্মৃতি ও প্রশ্ন হয়ে—সে স্বপ্ন কে বাস্তবায়ন করবে?
ঢাকার মোহাম্মদপুরে নিজের বাসায় মা-মেয়ের নৃশংস হত্যার ঘটনায় পুলিশও বিস্মিত। তদন্তকারীরা বলছেন, ঘাতক হয়তো প্রশিক্ষিত কিলার বা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত (সাইকোপ্যাথ), কারণ মরদেহের সুরতহাল ও আঘাতের ধরন অস্বাভাবিকভাবে নির্মম। ঘটনার বিবরণ: নিহতরা হলেন লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী, মা লায়লা গৃহিণী। হত্যাকাণ্ড ঘটে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে। আসামি আয়েশা নামের গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় প্রবেশ করেন, দুই ঘণ্টা পরে স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যান। মরদেহের সুরতহাল: মা লায়লা আফরোজের শরীরে অন্তত ৩০টি জখম, গলা, মুখ, হাত, বুক ও পেট জুড়ে। মেয়ে নাফিসার গলা ও বুকসহ ৬টি গভীর ক্ষত, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু। হত্যার জন্য দুটি ছুরি ব্যবহার করা হয়েছে; একটি সাধারণ সবজি কাটার ছুরি, অন্যটি বিশেষ ধরনের ‘সুইচ গিয়ার’ যা আঙুলে আটকে রাখা যায়। পুলিশের ধারণা, ঘাতক পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। হত্যার পরে তিনি ঠান্ডা মাথায় বাথরুমে গোসল ও পোশাক পরিবর্তন করে বাসা থেকে বের হয়েছেন। মোতাবেক, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে এবং হত্যার আগে ও পরে সন্দেহভাজনের কার্যক্রম খতিয়ে দেখছে। পলাতক গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই এই নৃশংস হত্যার নেপথ্য রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শাহজাহান রোডের নিজ বাসায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার ১৫ বছরের মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজকে গলা ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়। দুজনের দেহে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে—লায়লার দেহে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার দেহে অন্তত ৬টি আঘাত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গ কর্মকর্তাদের বরাতে পুলিশ জানায়, তাদের গলা ও ঘাড় লক্ষ্য করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়, যা ঘটনাটিকে পরিকল্পিত ও নৃশংস হিসেবে ইঙ্গিত করে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার সময় নাফিসার বাবা, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলশিক্ষক এ জেড আজিজুল ইসলাম কর্মস্থলে ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ—মাত্র চার দিন আগে কাজ শুরু করা খণ্ডকালীন গৃহকর্মীই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইবনে মিজান জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে হত্যার আগে ও পরে ফ্ল্যাটে ঢোকা–বের হওয়ার একমাত্র ব্যক্তি ওই গৃহকর্মী। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে অন্য কেউ জড়িত কি না। ফুটেজে দেখা যায়—আয়েশা নামের ওই গৃহকর্মী সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। পরে ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুল ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসার কাজিন নুরেম মাহপারার দাবি—গৃহকর্মীর পরিহিত ড্রেসটি নাফিসারই ছিল। পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, সকাল ৭টার দিকে আজিজুল বাসা থেকে বের হন। স্কুলে পরীক্ষা থাকায় তিনি স্বাভাবিক সময়ের আগেই ফিরে আসেন। বারবার ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে চাবি দিয়ে দরজা খোলেন। প্রবেশমুখেই মেয়ের নিথর দেহ এবং রান্নাঘরে রক্তে ভেজা অবস্থায় লায়লাকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে এবং পুলিশকে খবর দেন। পরিবারের দাবি, ঘটনার সময় পাশের দুই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বাসার বাইরে থাকায় কেউ কোনো শব্দ শুনতে পাননি। ভবনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, প্রায় ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী চার দিন আগে কাজের খোঁজে আসে। পরিবার গৃহকর্মী খুঁজছিল বলে তাকে পাঠানো হয়। সেদিন স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায় তাকে দেখে প্রথমে চিনতে পারেননি। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, দুই দিন আগে অতিথি হয়ে এসেছেন এবং এখন বের হচ্ছেন। এরপর দ্রুত রিকশায় চলে যান।