ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল দাউদ (৩৭) এবং তার সহযোগীদের নামে থাকা ৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত এই নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনি প্রচারণাকালে রাজধানীর পল্টন বক্স কালভার্ট রোডে শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো হয়। মোটরসাইকেলে করে আসা রাহুল দাউদ ও তার সহযোগীরা চলন্ত অবস্থায় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি শহীদ হন। প্রথমে ১৪ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে মামলায় ৩০২ ধারা (হত্যা) যুক্ত করা হয়। বর্তমানে মামলাটি ডিবি পুলিশের তত্ত্বাবধানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে আসামিদের আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণে আনতেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে, আর রাজনৈতিক সম্পর্কও স্বাভাবিক করার জন্য সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি সবসময় বলি, আমাদের বাণিজ্য ও রাজনীতিকে আলাদা করে দেখার প্রয়োজন। কূটনৈতিক নানা বিষয় থাকলেও অর্থনীতিতে বাস্তবতার দিকে নজর দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ভারতের বদলে ভিয়েতনাম থেকে চাল আনতে যাই, তবে প্রতি কেজিতে আরও ১০ টাকা খরচ বাড়বে।” ড. সালেহউদ্দিন আরও উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক খুব খারাপ অবস্থায় নেই, তবে সরকার চেষ্টা করছে যাতে তা অস্বাভাবিক না হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক চায় না এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টা নিজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সুর তুলেছেন পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) যুব শাখার এক শীর্ষ নেতা। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভারতকে সরাসরি হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, কোনো ধরনের আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত থাকবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় পিএমএল-এন যুব শাখার নেতা কামরান সাঈদ উসমানি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক জোট গঠনের আহ্বান জানান। এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। ভিডিও বক্তব্যে উসমানি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে বা কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের দিকে তাকায়, তাহলে মনে রাখতে হবে—পাকিস্তানের জনগণ, সেনাবাহিনী এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা খুব বেশি দূরে নয়। তিনি আরও দাবি করেন, ভারত যদি ‘অখণ্ড ভারত’ ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে পাকিস্তান তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। অতীতের উদাহরণ টেনে উসমানি বলেন, পাকিস্তান আগেও ভারতকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে, প্রয়োজনে আবারও তা করতে পিছপা হবে না। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের তৎপরতায় বাংলাদেশ বিরক্ত হচ্ছে এবং দেশটিকে হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। কামরান সাঈদ উসমানি প্রস্তাব দেন, বাংলাদেশের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক সামরিক জোট গঠন করা। পাশাপাশি বাংলাদেশে পাকিস্তানের এবং পাকিস্তানে বাংলাদেশের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের কথাও বলেন তিনি। তার মতে, এতে উভয় দেশের কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী হবে এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) বাংলাদেশের বন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হবে। উসমানি দাবি করেন, যাদের হাতে বন্দর ও সমুদ্রপথের নিয়ন্ত্রণ থাকে, তারাই বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে। সবশেষে তিনি মন্তব্য করেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্ভাব্য সামরিক অংশীদারিত্ব দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
আসন্ন বিপিএল শুরুর ঠিক আগে বড় ধাক্কা খেল নোয়াখালী এক্সপ্রেস। দলের অন্যতম তারকা ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে ছাড়াই টুর্নামেন্টে নামতে হচ্ছে নতুন এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবারের বিপিএলে অংশ নিতে পারছেন না শ্রীলঙ্কার এই ডানহাতি ব্যাটার। জানা গেছে, গত সপ্তাহে দুবাইয়ে কুশল মেন্ডিসের জরুরি অস্ত্রোপচার করতে হয়। চিকিৎসকরা তার শরীরে ব্লাডার স্টোন শনাক্ত করার পর দ্রুত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তিনি বিশ্রামে রয়েছেন। কবে নাগাদ তিনি মাঠে ফিরতে পারবেন—এ বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানানো হয়নি। এ কারণে বিপিএলের পাশাপাশি চলমান আইএল টি-টোয়েন্টিতেও খেলতে পারছেন না মেন্ডিস। এই টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েই তার শারীরিক জটিলতা ধরা পড়ে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আইএল টি-টোয়েন্টির বাকি ম্যাচগুলো তো বটেই, বিপিএলেও আর দেখা যাবে না এই লঙ্কান ব্যাটারকে। এখনো পর্যন্ত আইএল টি-টোয়েন্টিতে তার দল শারজাহ ওয়ারিয়র্স কিংবা বিপিএলের নোয়াখালী এক্সপ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিকল্প ঘোষণা করেনি। তবে নোয়াখালীর স্কোয়াডে তার পরিবর্তে আছেন জনসন চার্লস। সবকিছু ঠিক থাকলে, সৌম্য সরকারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জনসন চার্লসকেই দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া হাবিবুর রহমান সোহানেরও ওপেনিং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে ওপেনিং কম্বিনেশন নিয়ে নোয়াখালীর খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। নোয়াখালী এক্সপ্রেস স্কোয়াড: হাসান মাহমুদ, সৌম্য সরকার, জনসন চার্লস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলি অনিক, হাবিবুর রহমান সোহান, মুশফিক হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, রেজাউর রহমান রাজা, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু হাসিম, মেহেদী হাসান রানা, সৈকত আলী, সাব্বির হোসেন, রহমতউল্লাহ আলী, ইহসানউল্লাহ খান, হায়দার আলী, মোহাম্মদ নবি ও হাসান ইসাখিল।
দেশের স্বর্ণবাজারে আবারও বড় দফায় মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে। টানা ষষ্ঠবারের মতো সোনার দাম বাড়িয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সর্বশেষ ঘোষণায় ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ২৮২ টাকা, যা দেশের বাজারে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই মূল্যবৃদ্ধির তথ্য জানায় বাজুস। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এই দাম বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়। এর আগে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হচ্ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ টাকায়, ১৮ ক্যারেটের সোনার দাম ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ৭২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম নির্ধারিত ছিল ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৯ টাকা। বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যোগ করতে হবে। তবে গহনার নকশা ও মানভেদে মজুরির পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে। এদিকে সোনার পাশাপাশি দেশের বাজারে রুপার দামও বেড়েছে। ভরিতে ১৭৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ১৩২ টাকা। এর আগে এই দাম ছিল ৪ হাজার ৯৫৭ টাকা।
কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই পাল্টাপাল্টি তলবের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে। চায়ের আমন্ত্রণের অজুহাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশ সরকার। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারকে তলবের পর বিকেলেই পাল্টা পদক্ষেপ নেয় দিল্লি। গত ১০ দিনের মধ্যে এই নিয়ে চার দফায় দুই দেশ একে অপরের কূটনীতিককে তলব করে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছে। দিনের শুরুতে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে। এ সময় ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও হাইকমিশনারের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভ ও হুমকির ঘটনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যদের ভাঙচুরের ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ। এর প্রতিক্রিয়ায় বিকেলে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তলবের সময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বি শ্যাম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ইস্যুতে অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সবসময় বাস্তবতা ও তথ্যের ভিত্তিতেই বিভিন্ন বিষয়ে তার অবস্থান তুলে ধরছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল দাউদ (৩৭) এবং তার সহযোগীদের নামে থাকা ৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত এই নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনি প্রচারণাকালে রাজধানীর পল্টন বক্স কালভার্ট রোডে শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো হয়। মোটরসাইকেলে করে আসা রাহুল দাউদ ও তার সহযোগীরা চলন্ত অবস্থায় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি শহীদ হন। প্রথমে ১৪ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও হাদির মৃত্যুর পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে মামলায় ৩০২ ধারা (হত্যা) যুক্ত করা হয়। বর্তমানে মামলাটি ডিবি পুলিশের তত্ত্বাবধানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে আসামিদের আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণে আনতেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে, আর রাজনৈতিক সম্পর্কও স্বাভাবিক করার জন্য সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি সবসময় বলি, আমাদের বাণিজ্য ও রাজনীতিকে আলাদা করে দেখার প্রয়োজন। কূটনৈতিক নানা বিষয় থাকলেও অর্থনীতিতে বাস্তবতার দিকে নজর দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা ভারতের বদলে ভিয়েতনাম থেকে চাল আনতে যাই, তবে প্রতি কেজিতে আরও ১০ টাকা খরচ বাড়বে।” ড. সালেহউদ্দিন আরও উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক খুব খারাপ অবস্থায় নেই, তবে সরকার চেষ্টা করছে যাতে তা অস্বাভাবিক না হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক চায় না এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টা নিজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনার সুর তুলেছেন পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) যুব শাখার এক শীর্ষ নেতা। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভারতকে সরাসরি হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, কোনো ধরনের আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত থাকবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় পিএমএল-এন যুব শাখার নেতা কামরান সাঈদ উসমানি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক জোট গঠনের আহ্বান জানান। এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। ভিডিও বক্তব্যে উসমানি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে বা কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের দিকে তাকায়, তাহলে মনে রাখতে হবে—পাকিস্তানের জনগণ, সেনাবাহিনী এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা খুব বেশি দূরে নয়। তিনি আরও দাবি করেন, ভারত যদি ‘অখণ্ড ভারত’ ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে পাকিস্তান তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। অতীতের উদাহরণ টেনে উসমানি বলেন, পাকিস্তান আগেও ভারতকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে, প্রয়োজনে আবারও তা করতে পিছপা হবে না। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের তৎপরতায় বাংলাদেশ বিরক্ত হচ্ছে এবং দেশটিকে হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। কামরান সাঈদ উসমানি প্রস্তাব দেন, বাংলাদেশের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে একটি আনুষ্ঠানিক সামরিক জোট গঠন করা। পাশাপাশি বাংলাদেশে পাকিস্তানের এবং পাকিস্তানে বাংলাদেশের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের কথাও বলেন তিনি। তার মতে, এতে উভয় দেশের কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী হবে এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) বাংলাদেশের বন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হবে। উসমানি দাবি করেন, যাদের হাতে বন্দর ও সমুদ্রপথের নিয়ন্ত্রণ থাকে, তারাই বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে। সবশেষে তিনি মন্তব্য করেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্ভাব্য সামরিক অংশীদারিত্ব দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
আসন্ন বিপিএল শুরুর ঠিক আগে বড় ধাক্কা খেল নোয়াখালী এক্সপ্রেস। দলের অন্যতম তারকা ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে ছাড়াই টুর্নামেন্টে নামতে হচ্ছে নতুন এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবারের বিপিএলে অংশ নিতে পারছেন না শ্রীলঙ্কার এই ডানহাতি ব্যাটার। জানা গেছে, গত সপ্তাহে দুবাইয়ে কুশল মেন্ডিসের জরুরি অস্ত্রোপচার করতে হয়। চিকিৎসকরা তার শরীরে ব্লাডার স্টোন শনাক্ত করার পর দ্রুত অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তিনি বিশ্রামে রয়েছেন। কবে নাগাদ তিনি মাঠে ফিরতে পারবেন—এ বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানানো হয়নি। এ কারণে বিপিএলের পাশাপাশি চলমান আইএল টি-টোয়েন্টিতেও খেলতে পারছেন না মেন্ডিস। এই টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েই তার শারীরিক জটিলতা ধরা পড়ে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আইএল টি-টোয়েন্টির বাকি ম্যাচগুলো তো বটেই, বিপিএলেও আর দেখা যাবে না এই লঙ্কান ব্যাটারকে। এখনো পর্যন্ত আইএল টি-টোয়েন্টিতে তার দল শারজাহ ওয়ারিয়র্স কিংবা বিপিএলের নোয়াখালী এক্সপ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিকল্প ঘোষণা করেনি। তবে নোয়াখালীর স্কোয়াডে তার পরিবর্তে আছেন জনসন চার্লস। সবকিছু ঠিক থাকলে, সৌম্য সরকারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জনসন চার্লসকেই দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া হাবিবুর রহমান সোহানেরও ওপেনিং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে ওপেনিং কম্বিনেশন নিয়ে নোয়াখালীর খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। নোয়াখালী এক্সপ্রেস স্কোয়াড: হাসান মাহমুদ, সৌম্য সরকার, জনসন চার্লস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলি অনিক, হাবিবুর রহমান সোহান, মুশফিক হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, রেজাউর রহমান রাজা, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু হাসিম, মেহেদী হাসান রানা, সৈকত আলী, সাব্বির হোসেন, রহমতউল্লাহ আলী, ইহসানউল্লাহ খান, হায়দার আলী, মোহাম্মদ নবি ও হাসান ইসাখিল।
দেশকে আবারও সংকট থেকে উদ্ধার করতে বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও বিএনপি দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে রক্ষা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, অতীতেও বিএনপি দেশকে ধ্বংসের প্রান্ত থেকে ফিরিয়ে এনেছে, এবারও তা করবে। তবে সামনে সময়টা কঠিন হতে পারে—এ কথা মাথায় রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে জেলা বিএনপির আয়োজনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। বক্তব্যের শুরুতে গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির স্মৃতিচারণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, শহীদ ওসমান হাদি গণতন্ত্র ও ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন এবং আগামী নির্বাচনের একজন প্রার্থী ছিলেন। তার এই অবস্থান প্রমাণ করে যে তিনি গণতান্ত্রিক পথেই রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তাই শহীদ ওসমান হাদি, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধা এবং একাত্তরের শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে দেশের মানুষের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়াই হতে হবে একমাত্র লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, দেশ এখন স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত। এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকেই নতুন করে দেশ গড়ে তুলতে হবে। এর আগে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা মূলত এই প্রজন্মের তরুণ সদস্য। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তবে ইন্টারনেট এখনো অনেকের জন্য ব্যয়বহুল, যা সহজলভ্য করা জরুরি। ইন্টারনেট সুবিধা তরুণদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে ইন্টারনেট সেবা আরও সহজ ও সাশ্রয়ী করা হবে। বিশেষ করে তরুণদের জন্য। আজিজুল হক কলেজে দেওয়া ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এখানে একজন শিক্ষার্থী এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে এবং পুনরায় লগইন করেও একই সুবিধা নিতে পারবে। দেশের আইটি পার্কগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলে জনগণের অর্থ অপচয় করে যে ডিজিটাল পার্কগুলো গড়ে তোলা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই অকার্যকর হয়ে পড়ে আছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এসব পার্ক সংস্কার ও কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ নারী স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, তরুণদের ভাষা শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা বিদেশে সহজেই চাকরির সুযোগ পায়। এ লক্ষ্যে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। বক্তব্যের শেষাংশে বিএনপির ৩১ দফা ও নতুন স্লোগানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তারেক রহমান বলেন, এখন আমাদের মূল লক্ষ্য একটাই—‘করবো কাজ, গড়বো দেশ; সবার আগে বাংলাদেশ’। এই লক্ষ্য সামনে রেখেই সবাইকে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি জিয়াউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। তার জন্য বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয় ও নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার আলাদা ব্যবস্থাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান। এই বাড়ির পাশেই ভাড়া করা বাসা ‘ফিরোজা’য় অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পাশাপাশি গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা একটি চেম্বার প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গুলশানে আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালিত হবে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি ভবনে বিএনপির নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় রিল-মেকিং প্রতিযোগিতা কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন। আগামী ২৫ ডিসেম্বর টানা ১৭ বছর লন্ডনে নির্বাসিত জীবন শেষে ঢাকায় ফিরছেন তারেক রহমান। এ উপলক্ষে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সেদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত থাকবেন। গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি মূলত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। কয়েক মাস আগে গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িটির দলিল বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন। বর্তমানে সেই বাড়িতেই উঠতে যাচ্ছেন তারেক রহমান। বাসভবনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়ির সামনে স্থাপন করা হয়েছে নিরাপত্তা ছাউনি এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা জানিয়েছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বসবাস নিশ্চিত করতেই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের চেম্বারের পাশেই তারেক রহমানের জন্য আলাদা চেম্বার প্রস্তুত করা হয়েছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও তার জন্য একটি পৃথক চেম্বার রাখা হয়েছে। সেখানে আগে থেকেই চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চেম্বার রয়েছে। গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি ভবনটি বিএনপির অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। চারতলা এই ভবনে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ব্রিফিং রুম, অন্য তলাগুলোতে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বসার ব্যবস্থা এবং একটি গবেষণা সেলও রাখা হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই দিনের অপেক্ষায় আছি। আমাদের বিশ্বাস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। তাকে ঘিরেই আমাদের সব প্রস্তুতি।” সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জিয়া উদ্দিন হায়দার, চেয়ারপারসনের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য সাইমুম পারভেজসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় থেকে তার পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী শিশির আসাদ, তানবীরুল বারী নয়ন এবং তেঁতুলিয়া উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী হাবিবুর রহমান হাবিব। মনোনয়নপত্র ক্রয়ের বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করে সারজিস আলম বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে পঞ্চগড়-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী আজ মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে সজাগ ও দায়িত্বশীল থাকতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগোনো সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নির্বাচনের বিকল্প নেই—গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মূল্যে ভোট আয়োজন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশ ও জনগণের ভবিষ্যৎ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র রুখতে হলে গণতান্ত্রিক পথেই এগোতে হবে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচিতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র থেমে নেই। দেশের কল্যাণে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই ষড়যন্ত্র থামানো সম্ভব—এ কারণেই যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হতে হবে।’ ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গতকাল শরিফ ওসমান হাদির ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলা হয়েছে। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এই হামলার পেছনে কারও কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’ তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে বিএনপির এক কর্মীর ওপর হামলার ঘটনাও উদ্বেগজনক। তার ভাষায়, ‘এসব ঘটনার মাধ্যমে কেউ হয়তো ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।’ অতীতের শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘অতীতে আওয়ামী স্বৈরাচার যেভাবে দেশ পরিচালনা করেছে, আমরা সেভাবে দেশ চালাব না। আমরা পরিবর্তন আনব, মানুষের কল্যাণ করব। সে লক্ষ্যেই “দেশ গড়ার পরিকল্পনা” আপনাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, নির্বাচিত হলে আমরা তা বাস্তবায়ন করব।’ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে জনগণের সঙ্গে মিশতে হবে, কথা বলতে হবে। বসে থাকলে চলবে না।’ বিএনপির দায়িত্ব ও করণীয় প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আমাদের বড় দায়িত্ব হলো দলের প্রতিটি পরিকল্পনা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। শুধু দোরগোড়ায় পৌঁছালেই হবে না, পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতেই হবে।’
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫