প্রায় দুই বছরে ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নামে প্রতিদিনই অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা। শুধু গোলা আর গুলিই নয়; গাজা আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধা-তৃষ্ণাকেও অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রশাসন। এছাড়া, প্রায়ই ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার শিকার হচ্ছে লেবানন, সিরিয়া আর ইয়েমেনও। এক কথায় গত দুই বছরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে ইসরায়েল।
পুরো বিশ্ব তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও নেতানিয়াহু প্রশাসনকে আগ্রাসনমূলক এসব কর্মকাণ্ডে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর পরম বন্ধুর এমন সমর্থন পেয়ে যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দখলদার রাষ্ট্রটি। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে একটি ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠনের পরিকল্পনা প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সবশেষ ইসরায়েলের হামলার শিকার হয়েছে কাতার ও তিউনিসিয়াও। এ অবস্থায় গভীর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আরব রাষ্ট্রে।
বিশেষ করে কাতারে হামলার পর থেকেই ইসরায়েলকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে আরব রাষ্ট্রগুলো। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকেও ভরসা অনেকটা উঠে গেছে তাদের।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এমনই তথ্য উঠে এসেছে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে।
সে অনুযায়ী, মার্কিন মদদপুষ্ট বেপরোয়া ইসরায়েল যে এখন যেকোনো দেশকেই আক্রমণ করে বসতে পারে ইতোমধ্যে এমন ধারণার জন্ম হয়ে গেছে আরব বিশ্বের সদস্যদের মধ্যে।
বিশেষত, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ উপসাগরীয় মিত্র কাতারে বিমান হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি বিশ্লেষকদের দৃষ্টি ঘুরে গেছে তুরস্কের দিকে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত এ দেশটির ওপর নজর রাখতে সম্প্রতি সাইপ্রাসকে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সরবরাহ করেছে ইসরায়েল।
এ নিয়ে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল রুবিন বলেন, এবার তুরস্ক হতে পারে দখলদার ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেট। এমনকি ন্যাটো সদস্যপদও হয়তো রক্ষা করতে পারবে না তুরস্ককে।
ইসরায়েলি অ্যাকাডেমিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেইর মাসরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আজ কাতার, কাল তুরস্ক।
এছাড়া, বিগত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলি মিডিয়াগুলোতে তুরস্ককে চিত্রিত করা হচ্ছে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে। বিশেষ করে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের উপস্থিতি ও যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ায় দেশটির পুনর্গঠনে ভূমিকা—এ বিষয়গুলোকে ‘নতুন হুমকি’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন ইসরায়েলি বিশ্লেষকরা।
এ অবস্থায় ইসরায়েলকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে আঙ্কারায়। নেতানিয়াহুর উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে এখন বেশ সতর্ক অবস্থানে তুরস্ক। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে হিটলারের আত্মীয় বলে আখ্যা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তার এক উপদেষ্টা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল যদি তুরস্কের ওপর হামলার চিন্তাও করে, তাহলে তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।
আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওমর ওজকিজিলসিক আল জাজিরাকে বলেন, আঙ্কারায় ইসরায়েলের হুমকি হয়ে ওঠার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েল আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারে বদ্ধপরিকর। তুরস্ক বিশ্বাস করে, ইসরায়েল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সমর্থন রয়েছে।
এছাড়া, কাতারে হামলার পর তুরস্কের মধ্যে আরেকটি শঙ্কা জন্মেছে; আর তা হলো— ন্যাটো জোটের প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর? কারণ, কাতার ‘মেজর নন-ন্যাটো অ্যালাই’ হলেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দৃশ্যমান প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
ওজকিজিলসিক বলেন, তুরস্ক বহু আগেই বুঝে গেছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কেবল যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর ওপর নির্ভর করা যাবে না।
এছাড়া সম্প্রতি কাতারে ইসরায়েলি হামলা তুরস্কের মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়িয়েছে। কারণ কাতার যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল তার ওপর হামলা চালিয়েছে এবং ওয়াশিংটনের কোনও দৃশ্যমান প্রতিরোধ দেখা যায়নি।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেই তার দখলনীতি প্রকাশ্যে এনে চূড়ান্ত লক্ষ্যের কথা ফলাও করে প্রচার করছেন। ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠন করে তিনি চাইছেন পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে। আর নেতানিয়াহুর সেই লক্ষ্যের পথে তুরস্ক ও ইসরায়েলের প্রথম সংঘর্ষের ক্ষেত্র হতে পারে সিরিয়ার স্থল ও আকাশসীমা।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, নেতানিয়াহুর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ভিশনের লক্ষ্যই হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে দুর্বল, অকার্যকর করে ফেলা; বিশেষ করে ইসরায়েল প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোকে বিভক্ত করে রাখা; আর এভাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নিজের ক্ষমতা বলবৎ করা।
সাবেক তুর্কি নৌ-অ্যাডমিরাল এবং ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ কৌশলের রূপকার সেম গুরদেনিজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ছায়ায় গ্রিস, গ্রিক সাইপ্রাস ও ইসরায়েলের সমন্বয়ে সাইপ্রাসে যে সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটি শক্তিশালী হচ্ছে, তা তুরস্কসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে নিয়োগ দেশের অন্যতম মানবিক সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে একজন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পদের নাম: টেকনিক্যাল অফিসার পদসংখ্যা: ১ জন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ২ বছর বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৪০ বছর বেতন ও চাকরির ধরন বেতন: ৫০,০০০ টাকা চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল: কুড়িগ্রাম আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির তত্ত্বাবধানে নতুন সমন্বিত ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নিয়োগের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-এ সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদে ৩৯৮ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পদের নাম: সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদসংখ্যা: ৩৯৮টি শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রার্থীদের যেকোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানসহ তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্তত দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। বয়সসীমা ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে। আবেদন সংক্রান্ত তথ্য আবেদন ফি: ২০০ টাকা (অনগ্রসর নাগরিক গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ৫০ টাকা)। আবেদনের শেষ সময়: ১০ নভেম্বর ২০২৫। আবেদন পদ্ধতি আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টেকনিক্যাল এক্সপার্ট’ পদে নতুন কর্মী নেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: ওয়াটারএইড বাংলাদেশ পদের নাম: টেকনিক্যাল এক্সপার্ট পদের সংখ্যা: নির্ধারিত নয় চাকরির ধরন: ফুল টাইম প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই কর্মস্থল: খুলনা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা স্নাতক (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং/এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে) অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছর বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন ও সুবিধা বেতন: প্রতি মাসে ৯২,৫০০ টাকা আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫
মায়ের অসুস্থতার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে আসায় পরীক্ষা না দিতে পারা সেই আনিসা আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তিনি বাংলা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ফেল করেন। আনিসা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি মানবিক বিভাগের পরীক্ষাথী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই (২৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এসময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে তিনি সেদিন ফিরে যান। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ। আনিসার কান্না-আকুতি তখন নাড়িয়ে দেন বহু মানুষের বিবেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে—আইন কি মানবিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে? নেটিজেনরা দাবি তোলেন—মানবিক বিবেচনায় হলেও তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারও সেই দাবি আমলে নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তখন শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানানো হয়, ‘পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
এক পুলিশ কর্মকর্তার উপর ৪ বার ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেছেন এক নারী চিকিৎসক। আত্মহত্যার আগে অভিযুক্ত পুলিশের নাম নিজের হাতে লিখেছেন ওই নারী। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে সাতারা জেলার একটি সরকারি হাসপাতালে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। চিকিৎসকের বাম হাতের তালুতে লেখা নোটে বলা হয়েছে, ফালতান থানার সাব-ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনে তাকে পাঁচ মাস ধরে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন এবং চারবার ধর্ষণ করেছেন। ওই নির্যাতনের কারণেই তিনি নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত ব্যাংকারের বিরুদ্ধেও মানসিক হয়রানির অভিযোগ করেছেন তিনি। ওই চিকিৎসক ফালতান উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের ১৯ জুন তিনি ফালতান উপবিভাগীয় পুলিশ কর্মকর্তাকে (ডিএসপি) পাঠানো এক চিঠিতে বাদনে, সাব-ডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাটিল ও সহকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর লাডপুত্রের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করেন এবং আইনি পদক্ষেপের আবেদন জানান। তিনি লিখেছিলেন, আমি প্রচণ্ড মানসিক চাপে আছি। অনুগ্রহ করে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিসের নির্দেশে অভিযুক্ত গোপাল বাদনেকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের এ আত্মহত্যার ঘটনায় শুক্রবার রাজ্যজুড়ে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিরোধী দল কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, যখন রক্ষকই ভক্ষক হয়, তখন নাগরিকদের নিরাপত্তা কোথায়? রাজ্য কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়াডেট্টিওয়ার বলেন, এই নারী চিকিৎসক আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন, কিন্তু সরকার ও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। মহায়ুতি সরকার পুলিশকে আড়াল করছে বলেই এ ধরনের নির্যাতন বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, শুধু তদন্ত কমিটি গঠন নয়, অভিযুক্তদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে এবং যারা অভিযোগ উপেক্ষা করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফিলিস্তিনের গাজায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গাজা থেকে আংশিকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের। কিন্তু, সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই গাজায় দানা বাঁধছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। প্রভাবশালী দুগমুশ গোত্রের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে হামাসের। এতে এখন পর্যন্ত এক ফিলিস্তিনি সাংবাদিকসহ অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার (১১ অক্টোবর) থেকে হামাস ও দুগমুশ গোত্রের মধ্যে শুরু হওয়া এই নজিরবিহীন অভ্যন্তরীণ সংঘাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নতুন করে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েই রোববার গাজা শহরের সাবরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আল-জাফরাউয়ি (২৮)। যুদ্ধের খবরাখবর নিয়ে ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। আল-জাজিরা জানিয়েছে, ‘প্রেস’ লেখা জ্যাকেট পরা অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলি সেনারা সরে যাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে সম্প্রতি নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় সাত হাজার সদস্যকে পুনরায় তলব করেছে হামাস। একইসঙ্গে সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাঁচজনকে নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে গোষ্ঠীটি। ‘গাজাকে আইন অমান্যকারী এবং ইসরায়েলের সহযোগীদের থেকে মুক্ত করার’ লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে হামাসের পক্ষ থেকে। ইসরায়েলি সেনারা সরে যেতেই গাজার বিভিন্ন জেলায় বেসামরিক পোশাকে এবং গাজা পুলিশের নীল উর্দিতে টহল দিতে দেখা যায় সশস্ত্র হামাস সদস্যদের। যদিও হামাসের মিডিয়া অফিস রাস্তায় যোদ্ধা মোতায়েনের বিষয়টি অস্বীকার করে। এই তৎপরতার মধ্যেই গাজা শহরের সাবরা এলাকায় দুগমুশ গোত্রের বন্দুকধারীদের গুলিতে হামাসের এলিট ফোর্সের দুই সদস্য নিহত হলে ভয়ংকর হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। নিহতদের একজন ছিলেন হামাসের সশস্ত্র শাখার সামরিক গোয়েন্দা প্রধান ইমাদ আকেলের ছেলে। প্রকাশ্য রাস্তায় তাদের মৃতদেহ ফেলে রাখা হলে হামাসের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ দুগমুশ গোত্রের একটি বিশাল এলাকা ঘিরে ফেলে হামাস যোদ্ধারা। এরপরই উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়। শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে দুগমুশ গোত্রের ১৯ জন এবং হামাসের ৮ সদস্য নিহত হয়েছেন। হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় তাদের আটজন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘর্ষের সূত্রপাত নিয়ে উভয় পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। দুগমুশ পরিবারের একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তারা সাবেক জর্ডান হাসপাতাল ভবনে আশ্রয় নিয়েছিল। হামাস সেখান থেকে তাদের উচ্ছেদ করে নিজেদের ঘাঁটি স্থাপন করতে চেয়েছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নতুন করে এই অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা একজন অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধের সময় হামাসের অস্ত্রাগার থেকে হাজার হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে, যা গৃহযুদ্ধের জন্য একটি ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার ওরাকজাই জেলায় মঙ্গলবার গভীর রাতে পরিচালিত এক অভিযানে ১৯ ভারতীয় প্রক্সি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে অভিযানের সময় এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল, এক মেজরসহ ১১ জন সেনা শহীদ হন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু করে। উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলিতে এই ফলাফল আসে। নিহত সন্ত্রাসীদের পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় স্বার্থে কাজ করা প্রক্সি যোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অভিযানের সময় শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক (৩৯) ও মেজর তৈয়ব রাহাত (৩৩) ছাড়াও ৯ জন সেনা সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আইএসপিআর বলেছে, সন্ত্রাসীদের নির্মূল ও সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে অভিযান চলবে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফও এই অভিযানকে প্রশংসা করেছেন এবং শহীদ সেনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত প্রক্সি গোষ্ঠীর কার্যক্রম রুখতে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সাম্প্রতিক এই অভিযান দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি শক্তিশালী করার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পাকিস্তান পুনরায় প্রমাণ করেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে এবং দেশকে নিরাপদ রাখতে তারা পিছু হটবে না।