হার্ট অ্যাটাককে আমরা প্রায়ই ‘হঠাৎ ঘটে যাওয়া’ এক প্রাণঘাতী ঘটনা ভেবে থাকি। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, এর অন্তত এক মাস আগে শরীর নীরবে নানা সতর্ক সংকেত পাঠায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগুলোকে বলা হয় ‘প্রোড্রোমাল সিম্পটম’ বা আগাম উপসর্গ। সময়মতো সতর্ক হলে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জীবন বাঁচানো সম্ভব।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে অন্তত এক মাস পর্যন্ত কিছু সাধারণ উপসর্গ অনেকের শরীরে দেখা যায়। যেমন-মাঝে মাঝে বুক ব্যথা, হালকা মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট কিংবা অকারণে ক্লান্তি। এগুলো একে একে চিনে রাখলে জীবন বাঁচানো সম্ভব।
হার্ট অ্যাটাকের আগাম ১২ সতর্ক সংকেত
১. বুকে ব্যথা
গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ৬৮ শতাংশ রোগী হার্ট অ্যাটাকের আগে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এই ব্যথা কখনও আসে, কখনও চলে যায়। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রম বা মানসিক চাপে এটি আরও তীব্র হতে পারে। অনেক সময় এটি এসিডিটির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়, যা বিপজ্জনক।
২. বুকে চাপ বা ভারী লাগা
চলাফেরা বা কাজের সময় যদি বুক ভারী মনে হয়, চেপে ধরা অনুভূত হয়-তাহলে সেটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। প্রায় ৪৪ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই এটি আসন্ন বিপদের পূর্বাভাস।
৩. হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া
হঠাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত বা অনিয়মিত ধুকপুক করা হার্টে রক্ত চলাচলের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। গবেষণায় প্রায় ৪২ শতাংশ রোগী এ উপসর্গ জানিয়েছেন।
৪. শ্বাসকষ্ট
সাধারণ কাজেই যদি দম নিতে সমস্যা হয়, মনে হয় যথেষ্ট অক্সিজেন পাচ্ছেন না,এটি হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
৫. বুকে জ্বালাপোড়া
অনেকেই একে সাধারণ অ্যাসিডিটি ভেবে ভুল করেন। অথচ বারবার বুক জ্বলা হার্টের ধমনিতে ব্লকেজের ইঙ্গিতও দিতে পারে।
৬. অকারণে ক্লান্তি
যথেষ্ট ঘুম হলেও সারাদিন অবসন্ন লাগা হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহে জটিলতার লক্ষণ। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
৭. মাথা ঘোরা বা অস্থিরতা
হঠাৎ মাথা ঘোরানো, ভারসাম্য হারানো বা অস্থিরতা শরীরে রক্তপ্রবাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণেই ঘটে থাকে।
৮. বমি বমি ভাব বা পেটের সমস্যা
গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত সমস্যা ভেবে অনেকে এড়িয়ে যান। তবে বারবার বমি বমি লাগা বা অস্বস্তি হৃদরোগের সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে।
৯. উদ্বেগ বা অজানা আতঙ্ক
কোনও সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই উদ্বেগ বা অস্থিরতা দেখা দিলে সেটি মানসিক সমস্যাই নয়, হার্ট অ্যাটাকের আগাম সতর্কবার্তাও হতে পারে।
১০. ঘুমের সমস্যা
রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, বারবার শ্বাসকষ্টে হঠাৎ জেগে ওঠা বা শোয়ার সময় দম বন্ধ হয়ে আসার মতো সমস্যা হার্টের অসুস্থতার সংকেত দেয়।
১১. পা বা গোড়ালি ফুলে যাওয়া
হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে না পারলে শরীরে পানি জমে যায়, যার প্রভাব পড়ে পা, গোড়ালি ও পায়ের পাতায়।
১২. শরীরের অন্য অংশে ব্যথা
হার্ট অ্যাটাক মানেই যে শুধু বুকে ব্যথা হবে তা নয়। অনেক সময় হাত, পিঠ, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা শুরু হয়—যা সপ্তাহখানেক আগেও টের পাওয়া যায়।
নারী ও পুরুষের উপসর্গে পার্থক্য
চিকিৎসকরা জানান, নারীদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো অনেক সময় ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। যেমন-অতিরিক্ত ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, পিঠে বা চোয়ালে ব্যথা এবং হজমে সমস্যা। এই লক্ষণগুলোকে অন্য অসুখ ভেবে অবহেলা করার ঝুঁকি বেশি, ফলে চিকিৎসা পেতে দেরি হয়।
কেন আগে থেকেই সংকেত দেয় শরীর?
হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহে বাধা। ধমনিতে জমতে থাকা চর্বি, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পদার্থ প্লাক তৈরি করে। যখন এই প্লাক ফেটে যায়, তখন রক্ত জমাট বেঁধে ধমনী বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটায়, যেগুলো উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়।
শেষ মুহূর্তে আরও তীব্র লক্ষণ
হার্ট অ্যাটাকের ঠিক আগে শরীর আরও জোরালো সংকেত দেয়। যেমন-তীব্র বুক ব্যথা, ঘেমে যাওয়া, বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, পিঠ বা চোয়ালে তীব্র ব্যথা। এগুলো একসঙ্গে দেখা দিলে চিকিৎসা নিতে দেরি করলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক সবসময় হঠাৎ করে আসে না। শরীর এক মাস আগেই তার ইঙ্গিত দিতে থাকে। তাই নিয়মিত বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের সমস্যা বা অস্বাভাবিক ক্লান্তিকে ছোট করে দেখবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে প্রাণঘাতী ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে নিয়োগ দেশের অন্যতম মানবিক সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে একজন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পদের নাম: টেকনিক্যাল অফিসার পদসংখ্যা: ১ জন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ২ বছর বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৪০ বছর বেতন ও চাকরির ধরন বেতন: ৫০,০০০ টাকা চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল: কুড়িগ্রাম আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির তত্ত্বাবধানে নতুন সমন্বিত ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নিয়োগের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-এ সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদে ৩৯৮ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পদের নাম: সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদসংখ্যা: ৩৯৮টি শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রার্থীদের যেকোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানসহ তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্তত দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। বয়সসীমা ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে। আবেদন সংক্রান্ত তথ্য আবেদন ফি: ২০০ টাকা (অনগ্রসর নাগরিক গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ৫০ টাকা)। আবেদনের শেষ সময়: ১০ নভেম্বর ২০২৫। আবেদন পদ্ধতি আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টেকনিক্যাল এক্সপার্ট’ পদে নতুন কর্মী নেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: ওয়াটারএইড বাংলাদেশ পদের নাম: টেকনিক্যাল এক্সপার্ট পদের সংখ্যা: নির্ধারিত নয় চাকরির ধরন: ফুল টাইম প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই কর্মস্থল: খুলনা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা স্নাতক (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং/এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে) অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছর বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন ও সুবিধা বেতন: প্রতি মাসে ৯২,৫০০ টাকা আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫
মায়ের অসুস্থতার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে আসায় পরীক্ষা না দিতে পারা সেই আনিসা আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তিনি বাংলা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ফেল করেন। আনিসা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি মানবিক বিভাগের পরীক্ষাথী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই (২৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এসময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে তিনি সেদিন ফিরে যান। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ। আনিসার কান্না-আকুতি তখন নাড়িয়ে দেন বহু মানুষের বিবেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে—আইন কি মানবিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে? নেটিজেনরা দাবি তোলেন—মানবিক বিবেচনায় হলেও তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারও সেই দাবি আমলে নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তখন শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানানো হয়, ‘পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
আশপাশে থাকা মানুষ প্রায়ই প্রশ্ন করেন, “বিয়ে করছো না কেন?” আবার অনেকেই বলেন, বিয়ে হলেই জীবনের সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা অন্য রকম। বিয়ে মানে শুধু পার্টনার পাওয়া নয়, বরং নতুন দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া। এই দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত করতে হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া অনুযায়ী, জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর আগে শুধুমাত্র আর্থিক স্বচ্ছলতা যথেষ্ট নয়। আরও কিছু মানসিক ও আচরণগত প্রস্তুতি থাকা দরকার। প্রধান বিষয়গুলো হলো: আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা বিয়ের আগে সহনশীল ও স্থির থাকা জরুরি। মতবিরোধ বা অসুবিধা হলে শান্তভাবে তা সমাধান করতে হবে। অল্পতেই রেগে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে সংসারের দায়িত্বভার সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়া বিয়ের পর নতুন সংসারের আর্থিক দায়িত্ব থাকে। খরচ, আয় ও লাইফস্টাইলের সামঞ্জস্য রাখতে হবে। “বিয়ে হোক, পরে দেখা যাবে” মানসিকতা ঠিক নয়। পরিণত আচরণের প্রতিশ্রুতি নতুন জীবনে ছোট-বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। ইতিবাচকভাবে সমস্যার সমাধান করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। নতুন অভিজ্ঞতা থেকে শেখার মানসিকতা থাকা দরকার। নিজ সম্পর্কে সচেতনতা নিজের ভালো-মন্দ দিক জানতে হবে। দুর্বলতা ও শক্তি মূল্যায়ন করে বুঝতে হবে, বিয়ে ও দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব নিতে আপনি কতটা প্রস্তুত। পরস্পর সহযোগিতামূলক আচরণ জীবনসঙ্গী, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে সবসময় সহযোগিতা থাকা উচিত। নতুন জীবনে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব ও ইতিবাচক মনোভাব থাকা দরকার। হবু সঙ্গীর সঙ্গে মতামত ও লক্ষ্যের মিল যার সঙ্গে বিয়ে হবে, তার সঙ্গে জীবনের আদর্শ, বিশ্বাস ও লক্ষ্য মিল থাকা জরুরি। খাবার, পেশা, শখসহ বিভিন্ন বিষয় জানলে বিয়ের পরে বোঝাপড়ায় সহজ হয়। সংক্ষেপে, বিয়ে মানে শুধু সম্পর্ক নয়, এটি মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক দায়িত্বের সমন্বয়। এই বিষয়গুলো যাচাই করে নিজেকে প্রস্তুত করা না হলে নতুন জীবন শুরু করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
হার্ট অ্যাটাককে আমরা প্রায়ই ‘হঠাৎ ঘটে যাওয়া’ এক প্রাণঘাতী ঘটনা ভেবে থাকি। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, এর অন্তত এক মাস আগে শরীর নীরবে নানা সতর্ক সংকেত পাঠায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগুলোকে বলা হয় ‘প্রোড্রোমাল সিম্পটম’ বা আগাম উপসর্গ। সময়মতো সতর্ক হলে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে অন্তত এক মাস পর্যন্ত কিছু সাধারণ উপসর্গ অনেকের শরীরে দেখা যায়। যেমন-মাঝে মাঝে বুক ব্যথা, হালকা মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট কিংবা অকারণে ক্লান্তি। এগুলো একে একে চিনে রাখলে জীবন বাঁচানো সম্ভব। হার্ট অ্যাটাকের আগাম ১২ সতর্ক সংকেত ১. বুকে ব্যথা গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় ৬৮ শতাংশ রোগী হার্ট অ্যাটাকের আগে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এই ব্যথা কখনও আসে, কখনও চলে যায়। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রম বা মানসিক চাপে এটি আরও তীব্র হতে পারে। অনেক সময় এটি এসিডিটির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়, যা বিপজ্জনক। ২. বুকে চাপ বা ভারী লাগা চলাফেরা বা কাজের সময় যদি বুক ভারী মনে হয়, চেপে ধরা অনুভূত হয়-তাহলে সেটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। প্রায় ৪৪ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই এটি আসন্ন বিপদের পূর্বাভাস। ৩. হৃদস্পন্দনের গতি বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া হঠাৎ হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত বা অনিয়মিত ধুকপুক করা হার্টে রক্ত চলাচলের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। গবেষণায় প্রায় ৪২ শতাংশ রোগী এ উপসর্গ জানিয়েছেন। ৪. শ্বাসকষ্ট সাধারণ কাজেই যদি দম নিতে সমস্যা হয়, মনে হয় যথেষ্ট অক্সিজেন পাচ্ছেন না,এটি হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। ৫. বুকে জ্বালাপোড়া অনেকেই একে সাধারণ অ্যাসিডিটি ভেবে ভুল করেন। অথচ বারবার বুক জ্বলা হার্টের ধমনিতে ব্লকেজের ইঙ্গিতও দিতে পারে। ৬. অকারণে ক্লান্তি যথেষ্ট ঘুম হলেও সারাদিন অবসন্ন লাগা হৃদপিণ্ডে রক্ত প্রবাহে জটিলতার লক্ষণ। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। ৭. মাথা ঘোরা বা অস্থিরতা হঠাৎ মাথা ঘোরানো, ভারসাম্য হারানো বা অস্থিরতা শরীরে রক্তপ্রবাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণেই ঘটে থাকে। ৮. বমি বমি ভাব বা পেটের সমস্যা গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত সমস্যা ভেবে অনেকে এড়িয়ে যান। তবে বারবার বমি বমি লাগা বা অস্বস্তি হৃদরোগের সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে। ৯. উদ্বেগ বা অজানা আতঙ্ক কোনও সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই উদ্বেগ বা অস্থিরতা দেখা দিলে সেটি মানসিক সমস্যাই নয়, হার্ট অ্যাটাকের আগাম সতর্কবার্তাও হতে পারে। ১০. ঘুমের সমস্যা রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া, বারবার শ্বাসকষ্টে হঠাৎ জেগে ওঠা বা শোয়ার সময় দম বন্ধ হয়ে আসার মতো সমস্যা হার্টের অসুস্থতার সংকেত দেয়। ১১. পা বা গোড়ালি ফুলে যাওয়া হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে না পারলে শরীরে পানি জমে যায়, যার প্রভাব পড়ে পা, গোড়ালি ও পায়ের পাতায়। ১২. শরীরের অন্য অংশে ব্যথা হার্ট অ্যাটাক মানেই যে শুধু বুকে ব্যথা হবে তা নয়। অনেক সময় হাত, পিঠ, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা শুরু হয়—যা সপ্তাহখানেক আগেও টের পাওয়া যায়। নারী ও পুরুষের উপসর্গে পার্থক্য চিকিৎসকরা জানান, নারীদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো অনেক সময় ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। যেমন-অতিরিক্ত ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, পিঠে বা চোয়ালে ব্যথা এবং হজমে সমস্যা। এই লক্ষণগুলোকে অন্য অসুখ ভেবে অবহেলা করার ঝুঁকি বেশি, ফলে চিকিৎসা পেতে দেরি হয়। কেন আগে থেকেই সংকেত দেয় শরীর? হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ হলো হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহে বাধা। ধমনিতে জমতে থাকা চর্বি, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পদার্থ প্লাক তৈরি করে। যখন এই প্লাক ফেটে যায়, তখন রক্ত জমাট বেঁধে ধমনী বন্ধ হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটায়, যেগুলো উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়। শেষ মুহূর্তে আরও তীব্র লক্ষণ হার্ট অ্যাটাকের ঠিক আগে শরীর আরও জোরালো সংকেত দেয়। যেমন-তীব্র বুক ব্যথা, ঘেমে যাওয়া, বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট, পিঠ বা চোয়ালে তীব্র ব্যথা। এগুলো একসঙ্গে দেখা দিলে চিকিৎসা নিতে দেরি করলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক সবসময় হঠাৎ করে আসে না। শরীর এক মাস আগেই তার ইঙ্গিত দিতে থাকে। তাই নিয়মিত বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের সমস্যা বা অস্বাভাবিক ক্লান্তিকে ছোট করে দেখবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে প্রাণঘাতী ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।