ঘুম ও স্বপ্ন: ইসলামের দৃষ্টিতে রহস্যময় এক জগৎ
যখন মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তার আত্মা একপ্রকার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবেশ করে এক অদৃশ্য জগতে—যেখানে দেখা, অনুভব ও ভুলে যাওয়ার এক অদ্ভুত মিশেল ঘটে। ইসলামে ঘুমকে শুধু দেহের বিশ্রাম নয়, বরং আল্লাহর এক বিশেষ নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন—
“আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী, রাত্রিকে করেছি আবরণ।”
(সুরা আন-নাবা: ৯-১০)
ইসলাম স্বপ্নকে দুই ভাগে ভাগ করেছে—
আর-রু’ইয়া (সত্য ও কল্যাণকর স্বপ্ন): এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে, সুসংবাদ বা সতর্কবার্তা হিসেবে।
আল-হুলম (দুঃস্বপ্ন): এটি শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, মানুষকে ভয় দেখানো বা বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে।
অনেকেই স্বপ্নে সাপ বা ভয়ঙ্কর প্রাণী দেখেন এবং ভীত হয়ে পড়েন। ইসলাম এ বিষয়ে পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
“ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে, আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে।”
(তিরমিজি: ৩৪৫৩)
তিনি আরও বলেছেন, যদি কেউ দুঃস্বপ্ন দেখে, তাহলে—
আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে,
বাম দিকে তিনবার হালকা থুথু ফেলবে,
এবং স্বপ্নটি কারও কাছে বলবে না।
তাহলে এর কোনো ক্ষতি হবে না। (বুখারি: ৬৫৬৮)
প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন—
“স্বপ্নে সাপ বা হিংস্র জন্তু দেখা অনেক সময় শত্রুতার ইঙ্গিত দেয়—অর্থাৎ কারও আপনার বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব থাকতে পারে। আবার অনেক সময় এটি শয়তানের প্ররোচনাও হতে পারে, যা মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য সৃষ্টি হয়।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব স্বপ্ন কালো জাদু বা দুষ্ট জিনের প্রভাবে হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো অর্থহীন এবং ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।”
স্মরণ রাখুন:
ভালো স্বপ্নে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন,
খারাপ স্বপ্নে আল্লাহর আশ্রয় নিন।
কারণ স্বপ্নও হতে পারে পরীক্ষার এক রূপ।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এক নজরে নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (BDRCS) বিভাগের নাম: অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন পদের নাম: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট অফিসার পদসংখ্যা: ০১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বা সমমান অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ১ বছর চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয় বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন: ৪৫,০০০ টাকা কর্মস্থল: ঢাকা আবেদন প্রক্রিয়া: আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে নিয়োগ দেশের অন্যতম মানবিক সংগঠন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘টেকনিক্যাল অফিসার’ পদে একজন যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেবে। আগ্রহীরা ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পদের নাম: টেকনিক্যাল অফিসার পদসংখ্যা: ১ জন যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ২ বছর বয়সসীমা: সর্বোচ্চ ৪০ বছর বেতন ও চাকরির ধরন বেতন: ৫০,০০০ টাকা চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই আবেদন করতে পারবেন কর্মস্থল: কুড়িগ্রাম আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির তত্ত্বাবধানে নতুন সমন্বিত ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নিয়োগের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক-এ সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদে ৩৯৮ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। পদসংক্রান্ত তথ্য প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পদের নাম: সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদসংখ্যা: ৩৯৮টি শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রার্থীদের যেকোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা চার বছর মেয়াদি স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি থাকতে হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানসহ তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্তত দুইটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি থাকতে হবে। কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। বয়সসীমা ১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে। আবেদন সংক্রান্ত তথ্য আবেদন ফি: ২০০ টাকা (অনগ্রসর নাগরিক গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য ৫০ টাকা)। আবেদনের শেষ সময়: ১০ নভেম্বর ২০২৫। আবেদন পদ্ধতি আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এবং আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘টেকনিক্যাল এক্সপার্ট’ পদে নতুন কর্মী নেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগের বিস্তারিত প্রতিষ্ঠানের নাম: ওয়াটারএইড বাংলাদেশ পদের নাম: টেকনিক্যাল এক্সপার্ট পদের সংখ্যা: নির্ধারিত নয় চাকরির ধরন: ফুল টাইম প্রার্থীর ধরন: নারী-পুরুষ উভয়ই কর্মস্থল: খুলনা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএসসি বা স্নাতক (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং/এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে) অভিজ্ঞতা: সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছর বয়সসীমা: নির্ধারিত নয় বেতন ও সুবিধা বেতন: প্রতি মাসে ৯২,৫০০ টাকা আবেদন প্রক্রিয়া আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের শেষ তারিখ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫
মায়ের অসুস্থতার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে আসায় পরীক্ষা না দিতে পারা সেই আনিসা আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তিনি বাংলা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ফেল করেন। আনিসা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি মানবিক বিভাগের পরীক্ষাথী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই (২৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এসময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে তিনি সেদিন ফিরে যান। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ। আনিসার কান্না-আকুতি তখন নাড়িয়ে দেন বহু মানুষের বিবেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে—আইন কি মানবিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে? নেটিজেনরা দাবি তোলেন—মানবিক বিবেচনায় হলেও তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারও সেই দাবি আমলে নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তখন শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানানো হয়, ‘পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
আর মাত্র চার মাস বাদেই শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। ২০২৬ সালে রমজান কবে শুরু হতে পারে, সেই সম্ভাব্য তারিখ জ্যোতির্বিদরা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। আমিরাত জ্যোতির্বিদ্যা সোসাইটির সভাপতি ইব্রাহিম আল-জারওয়ান জানিয়েছেন, আগামী বছরের রমজান শুরু হতে পারে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৬। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়াকে তিনি বলেন, ১৪৪৭ হিজরির রমজানের চাঁদ আকাশে উঠবে ১৭ ফেব্রুয়ারি, কিন্তু সূর্যাস্তের মাত্র এক মিনিট পর চাঁদ অস্ত হয়ে যাবে। তাই খালি চোখে দেখা সম্ভব হবে না এবং রমজান শুরু হবে ১৮ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ১৯ ফেব্রুয়ারি। তিনি আরও বলেন, ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ হবে ২০ মার্চ ২০২৬ (শুক্রবার)। মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশে—সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং কুয়েত—রমজানের শুরুতে প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে, যা শেষের দিকে ধীরে ধীরে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসবে। তবে সৌদি আরব সাধারণত তাদের নিজস্ব উম আল-কুরা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রমজান ও ঈদের তারিখ ঘোষণা করে থাকে। যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পর বাংলাদেশে রোজা শুরু হয়, তাই বাংলাদেশে রমজান শুরু হতে পারে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং ঈদুল ফিতর পালিত হবে ২১ মার্চ ২০২৬।
মুমিন জীবনের আজন্ম লালিত স্বপ্ন জান্নাতে যাওয়া। মুমিন জীবনের সফলতা রয়েছে জান্নাতে যাওয়ার মধ্যে। মানুষের কিছু কিছু অঙ্গ এমন যে এগুলো মানুষের জান্নাত কিংবা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যদি কেউ এই অঙ্গের সঠিক ব্যবহার করে তাহলে এই অঙ্গগুলো তাদের জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হবে, আর যদি কেউ এই অঙ্গগুলো গুনাহের কাজে ব্যবহার করে, তবে এই অঙ্গগুলো তাদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫)। আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৮২) দুটি কাজ রয়েছে যার জন্য মানুষ সবচেয়ে বেশি জাহান্নামে যাবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহভীতি (তাকওয়া) ও উত্তম চরিত্র।’ আবার তাকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪) উল্লিখিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জাহান্নামে যাওয়ার মৌলিক দুটি কাজের কথা উল্লেখ করেছেন, যা অধিক পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। এক. মুখ। দুই. লজ্জাস্থান। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই উরুর মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থান) জামানত আমাকে দেবে, আমি তাঁর জান্নাতের জিম্মাদার।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)। উল্লিখিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দুটি অঙ্গের ব্যাপারে তাঁর উম্মতদের সতর্ক করেছেন। প্রত্যেক মানুষের উচিত কথা বলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক হওয়া। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, নিশ্চয়ই বান্দা পরিণাম চিন্তা করা ছাড়াই এমন কথা বলে, যে কথার কারণে সে ঢুকে যাবে জাহান্নামের এমন গভীরে, যার দূরত্ব পূর্ব (পশ্চিম)-এর দূরত্বের চেয়েও বেশি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৭) লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে হবে। অন্যথায় জাহান্নামে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘(অবশ্যই সফল হয়েছে মুমিনগণ)... আর যারা তাদের লজ্জাস্থানকে সংরক্ষিত রাখে।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৫)
নবুয়ত লাভের আগে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) একজন অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। পূর্বপুরুষদের পথ অনুসরণ করে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন ও বাহরাইনসহ আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করেছেন। তাঁর সততা, বিশ্বস্ততা ও অনন্য দক্ষতার কারণে তিনি অল্প সময়েই মক্কার এক সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। মক্কার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হজরত খাদিজা (রা.)-এর ব্যবসাও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন, যা তাঁর ব্যবসায়িক প্রজ্ঞার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নবুয়তের দায়িত্ব লাভের পর দাওয়াতের কাজে সম্পূর্ণরূপে নিবেদিত থাকলেও তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যকে উপেক্ষা করেননি। বরং তিনি সাহাবিদের সর্বদা সৎপথে ব্যবসা করতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন, ‘জীবিকার দশ ভাগের নয় ভাগই ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে নিহিত, আর বাকি এক ভাগ গবাদিপশুর কাজে।’ (আল-জামিউস সাগির)। এই হাদিসটি কেবল ব্যবসার গুরুত্বই নয়, বরং ইসলামে সৎভাবে উপার্জনের প্রতি গভীর দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিচয় বহন করে। মহানবী (সা.) সব সময় ব্যবসার মূল ভিত্তি হিসেবে সততা ও নৈতিকতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সৎ ব্যবসায়ীরা সিদ্দিক (সত্যবাদী) ও শহীদদের সঙ্গে resurrect (উত্থিত) হবেন।’ (ইবনে মাজাহ)। এটি এক অনন্য সম্মান, যা আল্লাহ তাআলা একজন সৎ ব্যবসায়ীকে দান করবেন। হজরত রাফে ইবনে খাদিজা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যখন সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘ব্যক্তির নিজের শ্রমে উপার্জিত আয় এবং সততার সঙ্গে পরিচালিত বেচাকেনা।’ (মুসনাদে আহমাদ)। এই হাদিসগুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যকে শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখে না; বরং একে আল্লাহর ইবাদতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে—যেখানে সততা ও নৈতিকতার মানদণ্ড বজায় রাখা আবশ্যক। মহানবী (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা আমাদের এই মৌলিক শিক্ষা দেয় যে, একজন সৎ ব্যবসায়ী হওয়াও ইবাদতের অংশ এবং এটি প্রতিটি ব্যবসায়ীর জন্য এক অনুসরণীয় আদর্শ।